দশমিনা প্রতিনিধি ॥ পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার আলীপুরা ইউনিয়নে ভিজিডি’র সুফলভোগী ৬১৫ জনের তিন মাসের চাল লোপাটের ঘটনায় দৈনিক বিভিন্ন গণমাধ্যম একাধিক সংবাদ প্রকাশের পর ও পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ করার প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী অভিযোগের তদন্তের জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ পরিচালক মো. হেমায়েত উদ্দিনকে তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ করেছেন।
এর আগে, ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাদশা ফয়সাল সুফলভোগীদের টিপসইয়ের বদলে ভূয়া টিপসই দিয়ে চাল আত্মসাত করেছেন মর্মে ভুক্তভোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর টনকনড়ে সংশ্লিষ্টদের। সম্প্রতি নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে, একের পর এক জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে সরকার যখন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে ঠিক সে সময়েই সরকারের সামজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর অন্যতম একটি খাত ভিজিডি কর্মসূচীর ৬১৫ জন সুফলভোগীর তিন মাসের আত্মসাৎ করেছেন বলে দশমিনা উপজেলার আলিপুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাদশা ফয়সালের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ফুঁসে উঠেছেন স্থানীয়রা। চেয়ারম্যানের বিচারের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করছেন তারা। ভুক্তভোগীরা জানান প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল দেয়ার কথা থাকলেও চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি, মার্চ ও এপ্রিল মাসের চাল চেয়ারম্যান না দিয়ে ভূয়া মাস্টাররোল ও কার্ডে ভূয়া টিপসই দিয়ে আত্মসাত করেন। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের একাধিক ইউপি সদস্যরা। আর আওয়ামী লীগ দলীয় চেয়ারম্যান হওয়ায় এসব বিতর্কিত কর্মকা-ে বিব্রত স্থানীয় আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তবে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান বাদশা ফয়সাল বরাবরই সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এ বিষয়ে দশমিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানিয়া ফেরদৌস সাংবাদিকদের জানান, এ ঘটনায় ইউপি সদস্যরা অভিযোগের কপিটি আমি জেলা প্রশাসক বরাবর প্রেরণ করেছি। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ পরিচালক মো. হেমায়তে উদ্দিনকে তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ পরিচালক মো. হেমায়েত উদ্দিন জানান, তদন্তের জন্য আগামী ১৭ জুন তারিখ নির্ধারণ করে চিঠি দেয়া হয়েছে। ওই দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সুফলভোগী, ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য, অভিযুক্ত চেয়ারম্যান এবং স্থানীয়দের কাছ থেকে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে তদন্ত রিপোর্ট প্রদান করা হবে। এদিকে অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এর আগেও সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকা-ের অর্থ আত্মসাৎ, ত্রাণ আত্মসাৎ সহ গরু চুরি এবং নারীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে। নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই তিনি বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকা-ে জড়িয়ে পড়েন।
Leave a Reply